অলিম্পিকে অভিনব বিন্দ্রাকে দেখে রাইফেল শুটিং শেখার জন্য বায়না!সেই মেয়েই জিতল স্বর্ণপদক

আসমান ডেস্ক :দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ মিক্সড ইভেন্টে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল শুটিংয়ে স্বর্ণপদক জিতে অনন্য নজির গড়েন হুগলির বৈদ্যবাটির মেহুলি ঘোষ।অলিম্পিকে অভিনব বিন্দ্রাকে দেখে রাইফেল শুটিং শেখার জন্য মা-বাবার কাছে রীতিমতো বায়না শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মেয়ের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে মেহুলিকে শুটিংয়ের জগতে নিয়ে যান বাবা-মা। তবে মেহুলির এই সাফল্যের শিখরে পৌঁছনোর পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না।তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। কিন্তু মা ও দিদিমার অনুপ্রেরণায় শেষ পর্যন্ত রাইফেল শুটিংয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন মেহুলি।

সম্প্রতি সোনা জেতেন মেহুলি।এরপর বৃহস্পতিবার মহিলাদের দলগত ইভেন্টে রুপো জেতেন তিনি।বাবা নিমাই ঘোষ একটি আধা সরকারি সংস্থায় কাজ করেন। খুব সামান্যই রোজগার তাঁর। নিমাইবাবু মেয়েকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর আর্থিক সামর্থ্য নেই। কিন্তু তারপরও মেয়ে মাঝে মধ্যেই কান্নাকাটি করত। শেষ পর্যন্ত মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য মা মিতালি ঘোষ নিজের সোনা বন্ধক দিয়ে রাইফেল কিনে দেন। সেই সময় শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ কর্তা সুব্রত দাস পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।


২০২১-এ মেহুলি হায়দরাবাদে গগন নারাংয়ের শুটিং অ্যাকাডেমিতে বিবস্বান গঙ্গোপাধ্যায়ের কোচিংয়ে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। এই বিবস্বান গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশিক্ষণে অনেকটাই উন্নতি করে মেহুলি। ২০১৭য় ন্যাশনাল ইউথ জুনিয়ার এন্ড সিনিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে একসঙ্গে ন’টি মেডেল জিতে চ্যাম্পিয়ন হন মেহুলি। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

বুধবার মিক্স ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতে নজির গড়েন মেহুলি। যা নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে বাংলা।আজ মেয়ের এই সাফল্যে মা ও বাবা দুজনেই রীতিমতো খুশি। তেরো বছর বয়সে রাইফেল শুটিং -এর হাতেখড়ি মেহুলির। ২০১৪ য় বেলগাছিয়ায় স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে রুপোর পদক জিতে প্রি ন্যাশনাল শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মনোনীত হন মেহুলি। আমেদাবাদে প্রি ন্যাশনাল রাইফেল শুটিংয়ে অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জ পদক জিতে ন্যাশনালের জন্য মনোনীত হন। তবে ন্যাশনালে সেভাবেই দাগ কাটতে না পারলেও হাল ছাড়েননি মেহুলি।
