‘হাল ছেড়ো না বন্ধু’,বর্তমান যুব সমাজের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম অঞ্জু শর্মা

আসমান ডেস্ক :ফেল করেছিলেন দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষায়।শিকার হয়েছিলেন আত্মীয়-স্বজনের গঞ্জনার ।কথা শোনাতে ছাড়েননি পাড়া-প্রতিবেশীরাও। কিন্তু বছর কয়েক পরে সেই মেয়েই ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়ে তাক লাগিয়ে দেন সকলকে। প্রথম চেষ্টাতেই তিনি হয়ে ওঠেন আইএএস।সেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মেয়েটি আজ দেশের অন্যতম আইএএস অফিসার অঞ্জু শর্মা।২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পদে থেকে দেশের সেবা করে চলেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি গুজরাটের হায়ার অ্যান্ড টেকনিক্যাল এডুকেশনের মুখ্যসচিব।

রাজস্থানের জয়পুরে জন্ম অঞ্জু শর্মার। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা ভালবাসলেও কখনও খুব বেশি ক্ষণ পড়তেন না। মূলত পরীক্ষার আগের দিনই সিলেবাস শেষ করতে উঠেপড়ে নামতেন। এভাবেই স্কুলের বাকি ক্লাসের গণ্ডী পেরোলেও বাধ সাধল দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা। তবে মা-বাবা কিন্তু অঞ্জুকে বকাবকি করেননি। তাঁর উপর চাপ সৃষ্টিও করেননি। বরং সান্তনা দিয়ে বোর্ডের পরীক্ষার যাতে ভালো প্রস্তুতি হয়, সেই মনোবল যুগিয়েছিলেন।তারপর থেকে অঞ্জুও নিজের পড়াশোনায় বদল আনেন।


এরপর রাজস্থান বিশ্বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক (বিএসসি) হয়ে এমবিএ করেন। চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে, বিএসসি এবং এমবিএ, দু’টি পরীক্ষাতেই স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন অঞ্জু।এমবিএ করার পর শুরু হয় ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি। এরপর ১৯৯১ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল করেন তিনি। প্রথম চেষ্টাতেই তিনি হয়ে ওঠে আইএএস। যা দেখে চমকে যান আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা।

নিজের কর্মজীবনে একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন অঞ্জু। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার উপর কাজ করে পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আরও অজস্র পুরস্কার। শুধু তাই নয়! দেশ সেবার পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত দু’টি বইও লিখে ফেলেছেন তিনি। ‘আই অব দ্য স্টর্ম- ডিসকভার ইওর ট্রু সেল্ফ’ এবং ‘কর্পোরেট মঙ্ক-এ জার্নি ফ্রম ওয়েল্থ টু উইজডম’ নামে এই বই দুটির পাঠক সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বর্তমানে যুব সমাজের কাছে যেন এক অনুপ্রেরণার নাম অঞ্জু শর্মা। তার জীবন কাহিনী ভবিষ্যত প্রজন্মকে যেন আরও এক বলে গেল,’হাল ছেড়ো না বন্ধু’।
